ঢাকা,মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪

জেলায় ৬ বীর মুক্তিযোদ্ধার গ্রামের সড়কের বেহাল দশা

সেলিম উদ্দীন, ঈদগাঁহ :: কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের উত্তর গোমাতলী রাজঘাট পাড়ার ৬ বীর মুক্তিযোদ্ধার গ্রামের সড়ক যেন দেখার কেহ নেই। এ গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির এখন বেহাল দশা বিরাজ করছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইট-মাটি সরে গিয়ে রাস্তাটি সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকিপূর্ন হয়ে উঠেছে।
সড়কটিতে যেকোন সময় মারাত্মক দূর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা। সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারনে প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে।
সরেজমিন গতকাল গিয়ে দেখা গেছে, ইউনিয়নের উত্তর গোমাতলী, গাইট্যাখালী, আজিমপাড়া, রাজঘাট ও চরপাড়া গ্রামের মানুষের উপজেলা সদর ও ঈদগাঁহ বাজারের যাতায়তের একমাত্র সড়ক হওয়ার কারনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের যাতায়ত করতে হয়।
এ এলাকার মানুষের দ্রুত চলাচলের একমাত্র বাহন সিএনজি, মটরসাইকেল।
এছাড়া অটোরিক্সা ও টমটমেও তারা যাতায়ত করেন। এসব যানবহনগুলো মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে।
বিগত ঘূর্নিঝড় রোয়ানুর সময় সড়কটি ভেঙ্গে তলিয়ে যায় এরপর আর সড়কটির সংস্কার করা হয়নি।
এছাড়া সড়ক সংস্কারের ঠিকাদারি প্রতিষ্টান সড়কের অধিকাংশ জায়গা থেকে ইট তুলে নেয়ার কারণে জনবহুল এ রাস্তাটিতে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
দিনের বেলা কেনো মতে মানুষ চলাচল করলেও রাতের আন্ধকারে খানাখন্দে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।
সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় যানবাহনগুলোও শিকার হয় মারাত্মক দুর্ঘটনার। সড়কটির উপর নির্ভর করে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে আসা এলাকার সহস্রাধিক মানুষ পার্শবর্তি ইসলামপুর নৌঘাট দিয়ে চলাচল করে।
কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নেয়াও কষ্ট সাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন সড়কের বেহাল দশার কারনে অনেকেই বিনা চিকিৎসায় বাড়িতেই মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে শেষ মুহূর্তে আত্মসমর্পণ করতে হয়।
গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রায় ১ কিলোমিটার ভাঙ্গা সড়কে পায়ে হেঁটে মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা ও কলেজে আসা যাওয়া করে পড়াশুনা চালাতে সীমাহীন কষ্ট শিকার করতে হয় শিক্ষার্থীদের। এলাকার অনেক শিক্ষার্থী ঈদগাঁহ কলেজ ও মাদ্রাসায় পড়াশুনা করে তাদের সবাইকে পায়ে হেঁটে ঐ ভাঙ্গা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে পড়তে হয় স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ কয়েক’শ ব্যবসায়ী।
এলাকায় হাজার হাজার মানুষের বসবাস থাকলেও এদের জীবনমান নিয়ে কর্তৃপক্ষের নেই কোনো মাথাব্যাথা।
এলাকাবাসী জানায়, সড়কটির অবস্থা এতটা নাজুক হওয়ায় চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে এবং দূর্ঘটনার আশংকা থেকেই যাচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবী সড়কটি যদি এখনি সংস্কার না করা হয় তাহলে সড়কটির অবস্থা আরো খারাপ হবে এবং সাধারণ জনগণ আরো মারাত্মাক দূর্ভোগের শিকার হবে।
তাই সড়কটি যেনো দ্রুত সংস্কার করে সকলের যাতায়াতের জন্য উপযোগী করা হয় সেজন্য যথাযথ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছে স্থানীয়রা।
এলাকার লবণ ব্যবসায়ীরা জানান, সড়কে দূর্ভোগের কারনে তাদের মালামাল পরিবহনে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে। সড়ক ভালো না থাকায় গাড়ি প্রবেশ করাতে পারছেন না। তাছাড়া এই সড়ক পথে হাজার হাজার লবণ-মৎস্য শ্রমিক যাতায়ত করে। ভাঙ্গা এই সড়কের কারনে তাদেরও দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এছাড়া এলাকার মানুষ মৎস্য ও লবণ নির্ভর, তারা উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য ইসলামপুরে নিয়ে যেতে সীমাহীন কষ্ট ভোগ করতে হয়।
এ ব্যাপারে সড়ক উন্নয়নে জরুরী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি করছেন স্থানীয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ।
এবিষয়ে ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দুখু মিয়া চকরিয়া নিউজকে বলেন, রোয়ানুর পর থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘদিন জনবহুল এ রাস্তাটি মানুষ চলাচল ও যানবহনে যাতায়তের জন্য অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
তাই জরুরী ভিত্তিতে এ রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন ।
পোকখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিক আহমদ চকরিয়া নিউজকে বলেন, রোয়ানুর পর থেকে বহুল জনপদ অধ্যুষিত এ রাস্তাটি অবহেলিত রয়েছে। বারবার রাস্তাটির দূরবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও তারা কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর একে-অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে অতিতে এড়িয়ে গেছেন। যার কারনে বঞ্চিত হয়েছে এলাকার সাধারন মানুষ।
অতি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য তিনি কতৃপক্ষকে আবারো অনুরোধ জানান।
কক্সবাজার সদর স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী চকরিয়া নিউজকে বলেন, গোমাতলির এ রাস্তাটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধের কারনে বন্ধ ছিল। তাদের মাটির কাজ করার পর স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের কাজ শুরু করার কথা। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

পাঠকের মতামত: